চট্টগ্রাম ও সিলেটে পাহাড় ধসের সতর্কবার্তা

Share Now..

ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় চট্টগ্রাম ও সিলেটের পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের সতর্কবার্তা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে ১০ জনের মৃত্যুর খবরের মধ্যেই এ সতর্কবার্তা এসেছে। অন্যদিকে উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার কারণে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। আগামী ১০ দিন বৃষ্টিপাত কমার সম্ভাবনা নেই।

বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামে দেশের সর্বোচ্চ ১৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া সিলেটে ১৩৪ মিলিমিটার, পঞ্চগড়ে ১২৪, হবিগঞ্জে ১১২ মিলিমিটার, রংপুরে ১১১, নোয়াখালীতে ৭১, কক্সবাজারে ৬৫, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৬০, ময়মনসিংহে ৫৮, পিরোজপুরে ৫৬, বরিশালে ৫৩, বান্দরবানে ৪৮, বাগেরহাটে ৪৬, নেত্রকোনায় ৪৬ ও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও দেশের বেশিরভাগ এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম বলেন, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। এছাড়া মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রংপুর, ময়নসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেটে আগামী দুই দিন ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের সতর্কতা দেওয়া হয়েছে।

ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের শঙ্কা রয়েছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ শাহীনুল। তিনি বলেন, আগামী ১০ দিন বৃষ্টিপাত কমার সম্ভাবনা নেই। তাই বন্যার পানি বাড়তে পারে।

বুধবার সন্ধ্যায় ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।

টানা বর্ষণ আর উজানের ঢলে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চলছে বন্য। সুরমা ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোণা জেলার নিম্নাঞ্চল এবং সিলেট, সুনামগঞ্জ জেলায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে। মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু-খোয়াই নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের চলমান বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

এছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলের দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি সমতল আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর জেলার নিচু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এর ঠিক উল্টো পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলায়। বৃষ্টি না হওয়ায় তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ ৩৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় বুধবার। বৃষ্টির প্রবণতা বাড়লে ধীরে ধীরে এ তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *