নতুন চর্চায় বিব্রত শোবিজ অঙ্গন

Share Now..

বিগত কয়েক বছর ধরে দেশের শোবিজ তারকারা তাদের কাজের চেয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি করেই বিনোদিত করছেন দর্শকদের। শিল্পী সমিতির শেষ দুই নির্বাচনে নিপুণ, জায়েদ, ডিপজলদের চেয়ার দখলের চেষ্টা আর একে অন্যের বিরুদ্ধে কথার ফুলছড়ি ছিল চোখে পড়ার মতো। বলা চলে, রীতিমতো সার্কাসে পরিণত হয় তাদের কার্যকলাপ।

এমনকি গত নির্বাচনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে জয় চৌধুরী-শিবা সানুদের হাতাহাতি নতুন সমালোচনার জন্ম দেয়। কিন্তু  এত দিন বিষয়টি শিল্পী সমিতিতে আবদ্ধ থাকলেও এবার সেই গণ্ডি ভেদ করেছে। কাজ ছাপিয়ে শিল্পী-নির্মাতার মারামারি, তর্ক-বিতর্ক যেন নিত্যদিনের রুটিনে পরিণত হয়েছে। যা নিয়ে সিনিয়র অনেক তারকাই এখন বিব্রত। নানা মাধ্যমে নিজেদের আক্ষেপের কথাও জানাচ্ছেন তারা।

গত ঈদে মুক্তি পায় ৫ সিনেমা। যেগুলোর মূল ভূমিকায় দেখা মেলে শাকিব, বুবলী, রোশান, ববি, পূজাকে। কিন্তু একমাত্র শাকিবের তুফান এখন অবধি নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে। বাকি সিনেমাগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। আর এর জন্য শিল্পী-নির্মাতারা একে অপরকে দায়ী করতে ব্যস্ত। এমনকি ছবি ফ্লপের রেশ ধরে নির্মাতার গায়ে নায়িকার হাত তোলার বিষয়টিও সামনে এসেছে।

ঈদে মুক্তি পায় নির্মাতা ইকবাল পরিচালিত বুবলী-রোশানের ‘রিভেঞ্জ’। কিন্তু সিনেমার প্রচারে সেভাবে দেখা যায়নি বুবলী-রোশানকে। যে কারণে সিনেমাটি ফ্লপ হয়েছে বলে মনে করছেন নির্মাতা। আর এ কারণেই ইকবাল তার পরবর্তী সিনেমা থেকে এই জুটিকে বাদ দিয়েছেন। এছাড়াও বুবলী ও রোশানকে নিয়ে বেশকিছু বক্তব্যও দেন ইকবাল। তিনি বলেন, ‘রোশান-বুবলীকে জুটি করে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম। কিন্তু দর্শক জুটিটি পছন্দ করেনি। তাই তাদের পরবর্তী সিনেমা থেকে বাদ দিয়েছি।

তিনি আরো দাবি করেন, হয়তো চিত্রনায়ক শাকিব খানের ‘তুফান’ ছবি মুক্তির কারণে বুবলী ‘রিভেঞ্জ’ ছবির প্রচারণা করছেন না। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করে বুবলী জানান, তিনি তার সিনেমার প্রতি দায়িত্বশীল। তাই ঈদের আগে বিএফডিসিতে অনুষ্ঠিত ‘রিভেঞ্জ’ সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। সব প্রমোশনাল টিভি প্রোগ্রামে ‘রিভেঞ্জ’ সিনেমা নিয়ে কথা বলেছেন। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে শাকিবকে রাখেন তিনি।

বুবলী বলেন, ‘সিনেমার পরিচালক বিভিন্ন জায়গায় নানা বিষয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করেই যাচ্ছেন, এসবে যে তার সিনেমার ওপর দর্শকদের প্রভাব পড়ছে, তিনি তার তোয়াক্কা করছেন না।’ এদিকে বুবলী মুখ খুলতে না খুলতেই গণমাধ্যমে ইকবালকে রীতিমতো মুর্খ বলে মন্তব্য করেছেন রোশান। তিনি বলেন, ‘অযোগ্য এবং মূর্খরা সবসময় দুর্গন্ধ ছড়ায়। যোগ্য ও শিক্ষিতরা ছড়ায় আলো। কিছু কিছু মানুষ অন্যের কথা ভাবতে ভাবতে নিজের কথাই ভুলে যায়, একদিন সে অনেক দূরে একাই হারিয়ে যায়।’

তবে রিভেঞ্জ শুধু তর্ক-বিতর্কে আটকে থাকলেও রণক্ষেত্র তৈরি করেছে ময়ূরাক্ষী টিম। সিনেমাটি ফ্লপ হওয়ায় নির্মাতা পলাশ ও ববির মাঝে তুমুল দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। যা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়িয়েছে। ববির দাবি, তাকে যেভাবে সিনেমাটি নির্মাণ নিয়ে বলা হয়েছিল, তার বিন্দুমাত্র ছোঁয়াও পাননি। দুর্বল নির্মাণ, এডিটিং ও হল না পাওয়ায় রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে পিটিয়েছেন পরিচালককে। যা এরইমধ্যে নানা মহলে আলোচনা-সমালোচনার খোরাকে পরিণত হয়েছে। যদিও নির্মাতা পলাশ বিষয়টিকে খুব স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন! তবে কাজের দিকে মনোযোগী না হয়ে শিল্পী-নির্মাতা-কলাকুশলীদের এমন অপেশাদার আচরণ বা চর্চা দেশের ইন্ডাস্ট্রির ইমেজ কতটা সংকটে ফেলছে তা হয়তো সময়ই বলে দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *