রাত পোহালেই উরুগুয়ে-কলম্বিয়া মহারণ

Share Now..

ব্যস্ততম রজনী শেষ হতে যাচ্ছে। একদিকে কোপা আমেরিকা, অন্যদিকে ইউরো মিলে ফুটবলপ্রেমীরা জমজমাট মুহূর্ত উপহার পেয়ে আসছেন। এবার সেই আয়োজনে ভর করেছে শেষ দিকের উত্তেজনা। আগামীকাল সকাল ৬টায় কোপার শেষ সেমিফাইনালে মাঠে নামছে উরুগুয়ে-কলম্বিয়া। এই ম্যাচের মহারণ ঘিরে সবাই প্রস্তুত।

শার্লটের ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে প্রায় ৭৫ হাজার দর্শক অপেক্ষায় রয়েছেন এই ম্যাচ দেখতে। আর মোবাইল কিংবা টেলিভিশনের পর্দায় এই মহারণ দেখতে অপেক্ষায় রয়েছেন বিশ্বের কোটি কোটি ভক্ত। শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের এই পরীক্ষায় কে কতটা এগিয়ে থাকবে কিংবা কারা জ্বলে উঠতে পারে, সে বিষয়ে একনজর দেখে নেওয়া যাক।

কে কার মুখোমুখি

কলম্বিয়ার পক্ষে হামেস রদ্রিগেজ ও লুইজ দিয়াজরা যেভাবে আক্রমণের পসরা বসাবেন, তাতে মাতিয়াস অলিভেরাদের বেশ বেগ পেতে হবে। এই জায়গা থেকে উরুগুয়ের জন্য আরো অস্বস্তির খবর হলো রোনাল্ড আরাউহোর ইনজুরি। বার্সেলোনার এই তারকা ডিফেন্ডার চোট কাটিয়ে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ফিরতে না পারলে দলকে বেশ ভুগতে হবে।

অন্যদিকে ডারউইন নুনেজ, ফেডেরিকো ভালভার্দেরা থাকবেন উরুগুয়েকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্বে। এই জায়গা থেকে যোগ দিতে পারেন লুইস সুয়ারেজও। অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ দলটি তাই কলম্বিয়ার বিপক্ষে কিছুট স্বস্তিতে থাকতেই পারে। গোললাইনের নিচে অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে একদিকে ক্যামিলো ভার্গাস, অন্যদিকে উরুগুয়ের জার্সিতে সার্জিও রামন রোচেট। ভার্গাস ব্রাজিলের বিপক্ষে উড়ন্ত একটি সেভ দিয়ে দলকে পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন। ব্রাজিলের বিপক্ষে নিজেকে প্রমাণ করেছেন রোচেটও। টাইব্রেকারের শট ঠেকিয়ে তিনিই দলকে টেনে এনেছেন সেমি পর্যন্ত।

পরিসংখ্যানে এগিয়ে উরুগুয়ে

কলম্বিয়ার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৪৫টি ম্যাচ খেলেছে উরুগুয়ে। এর মধ্যে লা সেলেস্তেরা জিতেছে ২০ ম্যাচ। বিপরীতে কলম্বিয়ার জয় রয়েছে ১৪টি। বাকি ১১ ম্যাচ হয়েছে ড্র। তবে এ দুই দলের মধ্যকার সবশেষ পাঁচ ম্যাচে কেবল দুটি জয় তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র নিয়েই শেষ হয়েছে। গেল কোপা আমেরিকায় কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছিল কলম্বিয়া। এবার দল দুটি সেমির লড়াইয়ে মুখোমুখি হয়েছে।

উরুগুয়ের সবশেষ জয়টি এসেছিল ২০২০ সালে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের সেই ম্যাচে ৩-০ গোলে তারা জয় পেয়েছিল। সবশেষ ম্যাচটিও ছিল বাছাইয়ের। তবে সেটিতে ২-২ গোলে ড্র হয়েছিল। এবারের আসরে গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচেই জয় পেয়েছে উরুগুয়ে। শেষ আটে ব্রাজিলকে টাইব্রেকারে বিদায় করে তারা এসেছে। অন্যদিকে কলম্বিয়া গ্রুপ পর্বে ২ জয় ও ১ ড্র নিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। সেখানে পানামাকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে সেমি নিশ্চিত করেছে হামেস রদ্রিগেজের দল।

থাকবে পেশিশক্তির ব্যবহারও

কোপা আমেরিকার ফুটবলে পেশিশক্তির ব্যবহার নিয়মিতই দেখা যায়। কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল-উরুগুয়ে ম্যাচে যেন এই শক্তিই ফুটবল থেকে বড় হয়ে উঠেছিল। এই শক্তির বেশি ব্যবহার করে কলম্বিয়া। বিগত বিভিন্ন টুর্নামেন্টে সেই প্রমাণ দলটি রেখেছে। বিশেষ করে যখন পরাজয়ের মুহূর্তে থাকে দলটি, তখনই পেশিশক্তির ব্যবহার তারা বাড়িয়ে দেয়। ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে স্বাগতিক ব্রাজিলেরই বড় তারকা নেইমার জুনিয়রের পিঠে আঘাত করেছিলেন কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার হুয়ান ক্যামিলো জুনিগা। তারপর নেইমার ছিলেন দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে।

সেই জুনিগা এখন দলের সঙ্গে নেই। তবে বিকল্প এই ধারা ধরে রেখেছে দলটি। তাতে আগামীকালের ম্যাচে মূল ফুটবল থেকেও পেশিশক্তির বিষয়টি থাকবে আলোচনায়। চলতি আসরে এখন পর্যন্ত কলম্বিয়া কার্ড ছাড়া কোনো ম্যাচ খেলতে পারেনি। অর্থাত্, প্রতিটি ম্যাচেই দলটির ডিফেন্ডার কিংবা মিডফিল্ডারের কেউ না কেউ হলুদ কার্ডের খড়্গে পড়েছেন। এই জায়গা থেকে গ্রুপ পর্বে কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল উরুগুয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষের ম্যাচ বাদে আগের দুই ম্যাচে তারা কার্ড না দেখেই ম্যাচ শেষ করেছে। কোয়ার্টারে বিষয়টি ধরে রাখতে পারেনি ডারউইন নুনেজ বাহিনী। লাল কার্ডসহ একাধিক কার্ড দেখতে হয়েছে ব্রাজিলের ম্যাচে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *