গুঞ্জন উড়িয়ে দিল ভারত, শক্ত অবস্থানে পাকিস্তান
ওয়ানডে ফরম্যাটে মিনি বিশ্বকাপ খ্যাত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নবম আসর মাঠে গড়াবে আগামী বছর। আট বছর পর আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে পাকিস্তানে বসতে যাচ্ছে এই টুর্নামেন্ট। ইতিমধ্যে আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রাথমিক গ্রুপ ও খসড়া সূচিও নিশ্চিত করে ফেলেছে আয়োজক দেশটি। অপেক্ষা শুধু চূড়ান্ত করার। তবে এর মধ্যেই হঠাৎ করে ভেসে আসে এক গুঞ্জন।
দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকিস্তানে এই টুর্নামেন্ট খেলতে যাবে না ভারত। তাই তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করতে হবে, অর্থাৎ হাইব্রিড মডেলে আয়োজন করতে হবে এই টুর্নামেন্ট। ঐ প্রতিবেদনগুলোতে নাম প্রকাশ না করে বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তার বক্তব্যও যুক্ত করে দেওয়া হয়। তিনি জানিয়েছিলেন, এ বিষয়ে আইসিসির কাছে তারা চিঠি দেবেন।
এ সময় হাইব্রিড ভেন্যু হিসেবে দুবাই কিংবা শ্রীলঙ্কাকেও উল্লেখ করে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। তবে এই গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন বিসিসিআইয়ের সহসভাপতি রাজিব শুক্লা। এদিকে এই গুঞ্জনের পর নড়েচড়ে বসেছে আয়োজক দেশও। আর এতে পাকিস্তানে টুর্নামেন্টের সব ম্যাচ আয়োজনে ‘অনড়’ থাকার ঘোষণাও ইতিমধ্যে দিয়েছে পিসিবি।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫ আয়োজনের স্বত্ব পাকিস্তান পাওয়ার পর থেকেই ভারতকে নিয়ে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কেননা, গেল বছর অনুষ্ঠিত হওয়া এশিয়া কাপেরও আয়োজক ছিল পাকিস্তান। সে সময় ভারত সেখানে খেলতে যাবে না বলে জানিয়ে দেয়। পরে ব্যাপক নাটকীয়তার পর হাইব্রিড মডেলে শ্রীলঙ্কাকে সহ-আয়োজক করে মাঠে গড়ায় আসরটি। ভারতের সব ম্যাচ রাখা হয় শ্রীলঙ্কায়। তাই ধারণা করা হচ্ছিল, এই ইভেন্টেও এমনি কিছু হবে।
যেহেতু পুরো অনুষ্ঠান পাকিস্তান আয়োজন করছে, তাই এই ইভেন্টে অংশ নিলে ভারতকে দেশটিতে যেতে হবে। ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি) টুর্নামেন্টটি পাকিস্তান থেকে সরিয়ে নিতে বা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে ভারতের ম্যাচগুলো নির্ধারণের জন্য অনুরোধ করেছিল বলে জানা গেছে, তবে শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেট বোর্ড এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি করেনি। এ বিষয়ে বিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি রাজীব শুক্লা এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘কোন সূত্র থেকে এমন তথ্য (ভারত চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে না যাওয়ার বিষয়টি) দেওয়া হয়েছে তা আমরা জানি না। বিসিসিআইয়ের তরফে অবশ্য এসংক্রান্ত কোনো তথ্য জানানো হয়নি।’
দুই দেশের রাজনৈতিক ইস্যু ও নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ২০০৮ সালের এশিয়া কাপের পর থেকে পাকিস্তানে যায়নি ভারতীয় দল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে এবং এছাড়া এ দুই দেশ শেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজটি খেলেছিল ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে। এরপর বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট ছাড়া এ দুই দলকে মুখোমুখিও হতে দেখা যায় না।
এদিকে এই টুর্নামেন্ট সামনে রেখে বড় পরিকল্পনা সাজিয়েছে পাকিস্তান। তিনটি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। তাই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে তিনটি স্টেডিয়ামের উন্নয়নে ১২৮০ কোটি রুপি বরাদ্দ করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। স্টেডিয়ামগুলো হলো—লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়াম, করাচির ন্যাশনাল ব্যাংক ক্রিকেট এরিনা ও রাওয়ালপিন্ডি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম।
এর মধ্যে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ভারতের সব ম্যাচ রাখা হয়েছে লাহোরে। তাই সব মিলিয়ে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সব ম্যাচ পাকিস্তানে আয়োজনের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। এমনটি জানিয়েছে পাকিস্তানের কয়েকটি প্রথম সারির গণমাধ্যম। সেখানে এটাও উল্লেখ রয়েছে যে, ভারত যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে পাকিস্তান ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য ভারতে যাবে না। ঐ আসর ভারত ও শ্রীলঙ্কার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে।