শেখ হাসিনার দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড তোফাজ্জল-নিশাত

Share Now..

চাকরির মেয়াদ শেষে গত ৪ জুলাই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় তৎকালীন সরকার। পরে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার নিয়োগ বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অনিয়ম-দুর্নীতির কেন্দ্রবিন্দু ছিল তার কার্যালয়। সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সব অপকর্মের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে কাজ করতেন এই মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। তাকে সঙ্গ দিতেন কাজী নিশাত রসুল। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব ১ । শত শত কোটি টাকার বিনিময়ে প্রশাসনে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন এই দুজন। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও কাজী নিশাত রসুল জনগণের সেবক না হয়ে, হয়ে ওঠেন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার একান্ত অনুগত খাদেম। তার বিনিময়ে তারা পেয়েছেন একের পর এক পদোন্নতি। শেখ হাসিনার ডান হাত হয়ে অকল্পনীয় দুর্নীতি করেছেন তারা। চাটুকারিতার বদৌলতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ও একান্ত সচিবের পদ বাগিয়ে নেন। এখনো কাজ করছেন শেখ হাসিনার অবৈধ অর্থের অঘোষিত খাজাঞ্চি হিসেবে। 

বলছি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এপিএস কাজী নিশাত রাসুলের কথা।   সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের মূল হোতা তোফাজ্জল হোসেন ও কাজী নিশাত। মূলত অবৈধ প্রশাসনিক সিন্ডেকেট পরিচালনা হতো তাদের মাধ্যমে। শুধু তাই নয়, বদলি বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রশাসনিক ক্যাডার পদে নিয়োগ, প্রশাসনের উচ্চ পদে শত কোটি টাকা ঘুষের মাধ্যমে বদলি- এই দুই মাস্টারমাইন্ডের হাত হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছে আসতো। সেই ঘুষের হিসাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতেন সিন্ডিকেটের এই দুই হোতা।

বিশ্বস্ত সূত্র জানা যায়, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর বিপুল পরিমাণ অবৈধ নগদ অর্থ দেশে রেখে যান, যা বহাল তবিয়তে ভোগ করছেন সাবেক মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এপিএস কাজী নিশাত রসুল। সারাদেশে শক্ত প্রশাসনিক সিন্ডিকেট তৈরি করে সরকারের সকল সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতো তারা। এপিএস কাজী নিশাত তার স্বামী শহীদুল ইসলামকে শেখ হাসিনার যোগসাজশে ঢাকা জেলা প্রশাসকের পদ পাইয়ে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনে তাদের সিন্ডিকেটের প্রশাসনিক ক্যাডার নিয়োগের মাধ্যমে অনেক দুর্নীতি ধামাচাপা দেওয়া হতো বলে সূত্রে জানা গেছে। শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর পর এক এক করে বের হতে থাকে সব থলের বিড়াল। বের হয় সারাদেশে বহাল তবিয়তে থাকা প্রশাসনিক ৪০ ক্যাডারের অপরাধ কার্যক্রম। পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের দোসর বেশিরভাগই বহাল তবিয়তে বসে থাকায় সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করতে থাকে। এর পর থেকেই দেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে শুরু হয় বদলি-অপসারণ। কিন্তু ঘুরেফিরে আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন অনেককে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *