শৈলকুপায় সাপ আতঙ্কে গ্রামবাসী, আহত শতাধিক, মৃত ৩, কবিরাজ বাড়িতে লাইন

Share Now..

\ শৈলকুপা প্রতিনিধি \
ঝিনাইদহের শৈলকুপা শিংনগর গ্রামে সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে। এরই মধ্যে সাপের দংশনে রোকেয়া বেগম, জাহানারা বেগম ও শিল্পী খাতুন নামের তিন নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে একের পর এক নারী ও শিশুরা আহত হচ্ছে অদৃশ্য সাপের কামড়ে। ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপার ৩নং দিগনগর ইউনিয়নের শিংনগর গ্রামে। বর্তমানে অদৃশ্য এ সাপের আতঙ্কে অনেকটাই এখন পূরুষশূণ্য শিংনগর গ্রাম। সরেজমিনে সিংনগর গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, শরীরে একটু ব্যাথা অনুভব করলেই একের পর এক শিংনগর গ্রামের নারীরা ছুটছে কবিরাজের বাড়িতে। সেখানে অদৃশ্য সাপের কামড়ে আহত নারীদের চলছে ঝাড়ফুক। একটু সুস্থ্যতা বোধ করলেই ফিরছে বাড়িতে। শিংনগর গ্রামের সাপের কামড়ে মৃত রোকেয়া বেগমের পুত্রবধূ ফরিদা খাতুন জানান, গত ৩১ আগষ্ট তার শাশুড়ীকে রাতে সাপে দংশন করে। শরীরে অসস্তিবোধ করলে তাকে পাশর্^বর্তী কবিরাজ বাড়িতে নেওয়া হয়। দংশনের পরের দিন তার শরীর নীলবর্ণ ধারণ করে সে মারা যায়। এরপর চিকিৎসকের কাছে নিলে জানা যায় তাকে সাপে দংশন করেছে। এর পরের দিন তার জা রাবেয়া খাতুনকে সাপে দংশন করে এবং তার পরে তাকেও দুইবার সাপে দংশন করেছে। এরপর তার দুই প্রতিবেশী জাহানারা বেগম ও শিল্পী খাতুনও সাপের দংশনে মারা যায়। এরপর থেকে একের পর এক গ্রামের নারী শিশুরা অদৃশ্য সাপের দংশনে আহত হচ্ছে। বর্তমানে সমস্ত গ্রামবাসী এখন আতংকের মধ্যে বসবাস করছে বলে জানান। আহতরা সবাই কবিরাজের চিকিৎসায় সুস্থ্য বলে ফরিদা খাতুনের ধারণা।
কবিরাজ বাড়িতে দেখা শিংনগর গ্রামের জলি খাতুনের সাথে। তিনি জানান কয়েকদিন আগে তার মেয়েকে কোমরে দংশন করে অদৃশ্য সাপে। এরপর তাকে কবিরাজ বাড়িতে এনে সাপের দাঁত বের কারার পর সে সুস্থ্য। সোমবার (৭ অক্টোবার) সে পুনরায় অসুস্থতা বোধ করলে কবিরাজ বাড়িতে এসেছেন বলে জানান। শিংনগর গ্রামের আব্দুর রহিম বলেন, তাদের গ্রামে রাস্তার পাশে একটি বড় কড়ই গাছ ছিল। এ গাছটা কাঁটার পর থেকে গ্রামের সমস্ত মানুষকে অদৃশ্য সাপে দংশন করছে বলে জানান। শিংনগর গ্রামের ইউপি সদস্য মাহাবুবুর রহমান বলেন, একমাস ৮দিনে তাদের গ্রামের তিন নারী অদৃশ্য সাপের দংশনে মারা যায়। এরপর গ্রামের শতাধিক নারী শিশু একের পর এক এ সাপের দংশনে আহত হচ্ছে বলে তিনি জানান। আহত ব্যক্তিরা সবাই কবিরাজি চিকিৎসায় সুস্থ্য হচ্ছে বলে ইউপি সদস্য মাহাবুবুর রহমান বলেন। বর্তমানে গ্রামে এক অজানা আতংক বিরাজ করছে বলে জানান।
শিংনগন গ্রামের কবিরাজ আব্দুর রউফ বলেন, অদৃশ্য সাপের কামড়ে তাদের গ্রামের শতাধিক নারী শিশু আহত হয়ে তার কাছে চিকিৎসা নিতে আসছেন। সবাইকে যে সাপে দংশন করছে তা না অনেকে আতংকে অসুস্থ্য হয়েও তার কাছে আসছে। তিনি গাছের সাহায্যে তাদের চিকিৎসা দিচ্ছেন এবং তারা সুস্থ্য হচ্ছেন বলে জানান। ১মাস ৮দিনে তার গ্রামের তিন নারী সাপের দংশনে মারা যায় বলে জানান। শিংনগর গ্রামে সাপের দংশনে আহত ও মৃত্যুর ঘটনায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাশেদ আল মামুন বলেন, এ গ্রাম থেকে সাপের দংশনের কোন ব্যক্তি তাদের কাছে আসেনি। যা হচ্ছে তা আতংকের মধ্য থেকে হচ্ছে। এ নিয়ে গ্রামবাসীদের সাহস দিতে হবে ও কাউন্সিলিং করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *