শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শয্যা সংখ্যা প্রকট, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে রোগীর সংখ্যা ৩ গুণ বেশী

Share Now..

\ বিশেষ প্রতিনিধি, শৈলকুপা \
ঝিনাইদহের শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ মাস ধরে জ¦র, ডায়রিয়া , নিউমোনিয়া, শ^াসকষ্ট ও এ্যাজমা রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে জ¦র নিয়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত বয়স্ক ও শিশুরা। ৫০ শয্যার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১৫৪ রোগী। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে হাসপাতালে ভর্তি শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেশী। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিনগুন রোগী বেশী হওয়ায় দূর্ভোগে পড়েছে রোগীরা সেইসাথে সেবা দিতে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবার) ১১ টার দিকে হাসপাতাল ঘুরে সরেজমিন দেখা যায়, আউটডোরে ডাক্তারদের চেম্বারে সেবা নিতে আসা রোগীদের উপচে পড়া ভীড়, প্রতিদিন আউটডোরেই ৪ শতাধিক রোগীকে সেবা দেওয়া হয়। এছাড়াও জরুরি বিভাগ, পুরুষ ওয়ার্ড ও শিশু ওয়ার্ডে রোগীদের প্রচন্ড ভীড় লক্ষ্য করা যায়। এমনকি রোগীরা মেঝে ও বারান্দা ও করিডোরে শুয়ে আছে, তিল ধারণের ঠাই নেই। বিভিন্ন ওয়ার্ডে শয্যা ফাকা নেই মেঝে ও বারান্দায় গাদাগাদি করে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে রোগীরা। জ¦র ও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন ৩০-৪০ রোগী ভর্তি হচ্ছে, যা ওয়ার্ডের ধারণক্ষমতার তিনগুণেরও বেশি। বিভিন্ন বয়সের বেশীরভাগ রোগী কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর অনেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও অনেক বয়স্ক ও নবজাতকের গুরুতর অবস্থাও দেখা গেছে। ১৪ জন ডেঙ্গু রোগীও ভর্তি আছে। হঠাৎ রোগী বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে প্রতিদিন বিভিন্ন উপসর্গের ৫০ জন রোগী ভর্তি করা হচ্ছে যার ফলে শয্যা সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ডেঙ্গু জ¦র ও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। প্রতিদিন জ¦র, ডায়রিয়া, ডেঙ্গু ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। তবে শ^াসকষ্ট ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে বয়স্ক রোগীদেরও ভর্তি হতে দেখা দিয়েছে। সেবা নিতে আসা পৌর এলাকার মাঠপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আঃ খালেক বলেন, আমার ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে। আজ ২দিন হাসপাতালের বারান্দায় শুয়ে সেবা নিচ্ছি। কোন শয্যা ফাঁকা নেই। উপজেলার সিদ্দি গ্রামের দীপা খাতুন বলেন, আমার শিশুর ঠান্ডা জ¦র ও কাশি হয়েছে তাই হাসপাতালে এনেছি ডাক্তার দেখাতে। এসে দেখছি অনেক শিশুই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বেশী হওয়ায় এভাবে গাদাগাদি করে মেঝেতে সেবা নিতে হচ্ছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত এক শিশুর পিতা বলেন, কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছি। শীত বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে আমার শিশুর ডায়রিয়া শুরু হয়েছে। বেশ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ছিল আমার শিশু হাসপাতালে ভর্তির পর এখন কিছুটা উন্নতির দিকে। মেডিকেল অফিসার ডাঃ সোহেলী ইসলাম বলেন, বর্তমান ২০ জন ডেঙ্গু ও ১৬ জন ডায়রিয়া রোগী ছাড়াও ১৫০ শতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছে। তবে বেশীরভাগ জ¦রের রোগী ভর্তি আছে। বেশকিছুদিন ধরে জ¦রের এমন রোগীর চাপ দেখা যাচ্ছে। বর্তমান হাসপাতালে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। শৈলকুপা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদ আল মামুন বলেন, হাসপাতালে ভর্তি বেশীরভাগ রোগী জ¦রের। বর্তমান এখানে ধারণ ক্ষমতার থেকে রোগী অনেক বেশী। তাই শয্যার সংকুলান না হওয়ায় এভাবে মেঝেতে সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে এরপরেও যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি ভাল সেবা দেওয়ার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *