কমরেড ওয়াজেদ আলীর স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

Share Now..

\ প্রেস বিজ্ঞপ্তি \
শুক্রবার (১১ অক্টোবার) শহীদ কমরেড ওয়াজেদ আলী ও কামরুজ্জামান মনা’র ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা কমিটির উদ্যোগে বিকাল ৪টায় কালীগঞ্জ মেইন বাসস্ট্যান্ডে এক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। কালীগঞ্জ উপজেলা কমিটির আহŸায়ক সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও ধ্রæবতারা সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি শ্যামল কুমার ভৌমিক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি তোজাম্মেল হোসেন, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ বিএম শামীমুল হক, বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি হাফিজুর রহমান। আরও বক্তব্য রাখেন কৃষক সংগ্রাম সমিতির ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি ডাঃ ওলিয়ার রহমান ও ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি আব্দুস সালাম শাহ প্রমুখ। সভাটি পরিচালনা করেন মানবেন্দ্র দাস মিন্টু।
সভায় নেতৃবৃন্দ প্রয়াতদ্বয়ের সংগ্রামী জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে এ দেশে সাম্রাজ্যবাদ, সামন্তবাদ আমলা-মুৎসুদ্দি পুঁজিবাদ বিরোধী জাতীয় গণতান্ত্রিক বিপ্লবকে অগ্রসর করতে সকলের প্রতি উদাত্ত আহŸান জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পরিকল্পনায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে তার মাধ্যমে এদেশে মার্কিনের অবস্থান আরও শক্তিশালী করার মাধ্যমে ইন্দো-প্যাসিফিক রণনীতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশকে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসী যুদ্ধে সম্পৃক্ত করার বিপদ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে পাল্টা অবস্থান নিতে সাম্রাজ্যবাদী চীন ও রাশিয়াও এদেশে তাদের অবস্থান ধরে রেখে প্রভাব বৃদ্ধি করতে তৎপর। সাম্রাজ্যবাদীদের এ সব অপতৎপরতা দেশে অস্থিতিশীলতা ও সংঘাত-সংঘর্ষ বৃদ্ধির বিপদ সামনে আনছে। নেতৃবৃন্দ সংখ্যালঘু সকল জাতি-ধর্মের মানুষের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং সা¤প্রদায়িক শক্তি ও উগ্র-জাতীয়তাবাদী শক্তিকে প্রতিহত করার জন্য জনগণের প্রতি আহŸান জানান। কমরেড ওয়াজেদ আলী ও কামরুজ্জামান মনার মত ১৯৭২-৭৫ সালে প্রায় ৩০ হাজার বামপন্থী নেতা-কর্মিদের বিনাবিচারে হত্যা করা হয়েছে, তারও বিচার আজপর্যন্ত হয়নি। গুম কমিশনকে ৭১ পরবর্তি সকল সরকারের আমলে গুমের তদন্ত বিচার করতে হবে।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, আজ থেকে ১৬ বছর আগে মার্কিন পরিকল্পনায় ও মার্কিন-ভারতের সমন্বিত তৎপরতায় স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসেছিল। ক্ষমতায় এসেই মার্কিন পরিকল্পনা কার্যকর করার সাথে সাথে ভারতের স্বার্থরক্ষায় একের পর এক জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছে। পরবর্তীতে সাম্রাজ্যবাদী চীনের সাথে মার্কিনের নেতৃত্বে পাশ্চাত্য সাম্রাজ্যবাদীদের দ্ব›দ্ব বৃদ্ধি পেলে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সাম্রাজ্যবাদের দালাল আওয়ামীলীগ সরকার চীন-রাশিয়ার সমর্থনে সাম্রাজ্যবাদের আরেক দালাল আঞ্চলিক শক্তি ভারতীয় মদদে বিনা ভোটের নির্বাচন করে স্বৈরতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকে। এ সময় গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম দমন করতে হত্যা, গুম ও মামলা-মোকদ্দমার মাধ্যমে এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আওয়ামী সরকার। কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রসমাজ আন্দোলন করলে শত শত ছাত্র-জনতাকে নৃশংসভাবে হত্যা ও হাজার হাজার মানুষকে গুরুতর আহত করে বর্বর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার। এর ফলে দেশ-বিদেশে সর্বত্র সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং ছাত্র-মধ্যবিত্ত-জনতার গণবিস্ফোরণে সেনা কর্মকর্তাদের চাপে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ত্যাগ করে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হয়। স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের পতন হলেও স্বৈরতান্ত্রিক বৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থা অক্ষুন্ন রেখে সাম্রাজ্যবাদের নতুন দালাল ক্ষমতায় এসে স্বৈরতন্ত্রকেই পাকাপোক্ত করছে। তাই আশু কর্তব্য হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ ও তার এদেশীয় দালালদের সমূলে উচ্ছেদ করে শ্রমিক-কৃষক-জনগণের রাষ্ট্র, সরকার ও সংবিধান প্রতিষ্ঠা করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *