কয়রায় পিচের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগে অনেক জায়গা দেবে গেছে

Share Now..

\ কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি \
খুলনার কয়রা উপজেলার প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে কয়রা সদর থেকে উত্তর বেদকাশি কাশিরহাট অভিমুখী সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ না হতেই দুই পাশ ধসে পড়ছে। কয়েক স্থানে দেবে গেছে কার্পেটিং।
নির্মাণ কাজ শেষের আগেই এমন পরিস্থিতির কারণে সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এলাকাবাসীরা অভিযোগ করে বলেন কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকির অভাবে সড়ক নির্মাণের কাজে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।
তবে নকশা ও প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ বুঝে নিয়েই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ ছাড়ের অনুমতি দেওয়া হবে জানিয়েছেন সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সাগর সৈকত মÐল। বলেন, প্রকল্পের কাজ এখনও চলমান। কোথাও বড় ধরনের কোনো ত্রæটি দেখা দিলে সেখানে নতুন করে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
মেসার্স মাহাবুব ব্রাদার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এ সড়কের নির্মাণ কাজ করছেন খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তসলিম আহমেদ আশা। গত বছরের ২৩ এপ্রিল আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য রশীদুজ্জামান মোড়ল কাজটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন।
খুলনা সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ‘জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের আওতায় কয়রা-কাশিরহাটখোলা সড়কের ৭ কিলোমিটার অংশ পুনর্র্নিমাণের জন্য ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবর দরপত্র আহŸান করা হয়। ৪৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যয়ের এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩১ ডিসেম্বর।১২ জানুয়ারি কাজের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সদরের মধুর মোড় থেকে বেদকাশি দীঘিরপাড় পর্যন্ত সড়কের নির্মাণকাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ। এর পরের এক কিলোমিটার অংশে বালু ভরাটের কাজ চলছে। এর মধ্যে কয়েক স্থানে সড়কের মাঝে বিদ্যুতের খুঁটি ও দোকানপাট রেখে কাজ শেষ করা হয়েছে। এ ছাড়া পুরাতন প্যালাসাইডিং রেখে দেওয়া হয়েছে কোনো কোনো জায়গায়। কয়েক স্থানে মাটি ভরাট করায় সড়কের পাশের প্যালাসাইডিং হেলে পড়তে দেখা গেছে। ২ নম্বর কয়রা কালভার্টের পর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার অংশে নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় সড়কের দুই পাশে দেবে গিয়ে উঁচু-নিচু হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মিজানুর বলেন সড়কটি পুনর্র্নিমাণের কথা থাকলেও সে নির্দেশনা মানা হয়নি। পুরাতন সড়কের ওপরেই নতুন করে কার্পেটিং হয়েছে। কিছু স্থানে পুরোনো কার্পেটিং তুলে ফেলা হলেও নিচের বালু ও খোয়া সরানো হয়নি। তা ছাড়া বিটুমিন, পাথরের মান ও মিশ্রণ ভালো না হওয়ায় সড়কটি বেশিদিন টিকবে না বলে মন্তব্য করে স্থানীয়রা।
বেদকাশি গ্রামের আবুল কালাম গাজী বলেন, সড়কের বেজ মজবুত না হলে এর ওপরের অংশ মজবুত হয় না। ঠিকাদার সড়কের তলায় মাটি ও বালুর মিশ্রণ বেশি ব্যবহার করেছেন। খোয়ার পরিমাণ কম দেওয়ায় বিভিন্ন স্থানে এরই মধ্যে দেবে যেতে শুরু করেছে।
কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি বিদেশ রঞ্জন বলেন, ২০২০ সালে সড়কের এ অংশে আরেকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছিল। তারা যৎসামান্য কাজ করার পর প্রাকৃতিক দুর্যোগে তা ভেসে যায়। এর পর প্রায় তিন বছর এ সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ ছিল। দীর্ঘ ভোগান্তির পর গত বছর নতুন করে কাজ শুরু হলেও কাজের মান ভালো হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আগের ঠিকাদারের করা গাইড ওয়াল ও প্যালাসাইডিংয়ের স্থায়িত্ব কমে গেলেও সে গুলো রেখেই নতুন ঠিকাদার কাজ শেষ করতে চাইছেন।
ঠিকাদার আওয়ামী লীগ নেতা তসলিম আহমেদ আশা আত্মগোপনে থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহাবুব ব্রাদার্সের পক্ষে শাহীন আলম বলেন, যেসব জায়গায় কাজের সমস্যা দেখা দিয়েছে তা নতুন করে ঠিক করে দেওয়া হবে। দু’এক জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি রয়ে গেছে, সেগুলোও সরানোর ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে কথা বলা হয়েছে তারা বিদ্যুতে খুটি সরিয়ে নেবে বলে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *