যশোরের শার্শার বাগআঁচড়া পশুহাট নিয়ে নয় ছয়ের অভিযোগ, আদালতে মামলা

Share Now..

\ যশোর জেলা প্রতিনিধি \
যশোরের শার্শা উপজেলার বাঁগআচড়া সাতমাইলের পশু হাট নিয়ে নয়ছয়ের অভিযোগে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। গত ২৯ জানুয়ারি ভবানীপুর গ্রামের জুম্মান গোলদারের ছেলে শার্শা থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস বাদী হয়ে নয়জনকে বিবাদী করে এ মামলা করেছেন। বিবাদীরা হলেন, বাগআচঁড়া গ্রামের কাসেদের ছেলে বাগআচড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন, লুৎফর রহমানের ছেলে জামাল, তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে মিঠু, আলী হোসেনের ছেলে রাজা বাবু, মত মাঈনুদ্দীন তরফদারের ছেলে মোনয়োব, মৃদ রুপচাঁদের ছেলে শাহাজান, শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও যশোরের জেলা প্রশাসক। এরআগে তিনি এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। এ মামলায় তিনি এ দুই কর্মকর্তাকেও বিবাদী করেছেন। বাদী এ হাট পরিচালনায় নিষেধাজ্ঞার আদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে সিনিয়র সহকারী জজ বিলাস মন্ডল বিবাদীদের প্রতি সমন ইস্যু করেছেন। একই সাথে আগামি ১৩ মার্চ এ মামলার পরবর্তি দিন ধার্য করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী মাসুদ রানা। বাদী নিজেকে জনপ্রতিনিধি দাবি করে দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করেন, শার্শা উপজেলার প্রাচীন সাতমাইল পশু হাটটি এখন সরকারী নিয়ম নীতি না মেনেই পরচালনা করছে ১-৬ নং বিবাদীরা। গায়ের জোরে এ চক্র হাটটি দখলে নিয়েছেন এমনকটি উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে এ হাট পরিচালনা করে আসছেন। তিনি অভিযোগ করেন, নিধারিত দিন অর্থাত প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার প্রতি হাটে ১ হাজার থেকে ১২ শ’ পশু বেচাকেনা হয়। কিন্তু আগে যে পরিমান খাজনা আদায় করা হত বর্তমানে তার থেকে ৫শ’ থেকে এক হাজার টাকা করে বেশী আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া ওই খাজনা আদায়ের টাকা সঠিকভাবে সরকারী কোষাগারে জমা হচ্ছে না বলে দাবি করেন বাদী রুহুল কুদ্দুস। তিনি জনপ্রতিনিধি হওয়ায় স্থানীয় ও দুরদুরন্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরা তার কাছে অভিযোগ দেন। মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, বিবাদীদের বিরুদ্ধে নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের নানা অভিযোগ রয়েছে। চরম অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা কবলে পড়ে পশু হাটে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। সরকারী কোষাগারে জমা দেওয়ার তারা বেশুমার লুটপাট চালাচ্ছে। বৈধ্য ইজারাদার না থাকায় প্রতি হাটে লাখ লাখ টাকা চলে যাচ্ছে তাদের পকেটে। বাদী গত ১২ জানুয়ারি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দেন। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। উল্টো তাকে নানা ধরণের হুমকি ধামকি দেয়া হয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি আদালতে এ মামলা করেন। একই সাথে এ হাট পরিচালনার ক্ষেত্রে আদালতের নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রাথনা করেন।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী মাসুদ রানা বলেন, আদালত বাদী পক্ষের অভিযোগ আমলে নিয়েছেন। একই সাথে বিবাদীদের প্রতি সমন জারির আদেশ দিয়েছেন। বাদী ন্যায় বিচার পাবেন বলে দাবি জানান তিনি। এ বিষয়ে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হার্ট নিয়ন্ত্রন করেন উপজেলা প্রশাসন। তারা শুধুমাত্র জনবল দিয়ে সহযোগিতা করেন। ফলে আর্থিক বিষয়ে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৩ এপ্রিল সাতমাইল পশু হাটের ইজারা শেষ হয়। এরপর ১৪ এপ্রিল থেকে ইজারা বিহীন ভাবে উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই পশু হাটটি চালাতেন বাগআঁচড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক চেয়ারম্যান ও হাটের সাবেক ইজারাদার ইলিয়াস কবির বকুল। ৫ আগস্ট পরবর্তী শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর এ মামলার বিবাদী বাগআঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন পশু হাটের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শার্শা উপজেলা প্রশাসনকে সাথে নিয়ে সাতমাইল পশুহাটটি পরিচালনা শুরু করেন। সাবেক ইজারাদারের কাছ থেকে নেওয়া কার্ডধারী ব্যাপারীরা পশুহাট হতে সুবিধা না পাওয়ায় আন্দোলন শুরু করলে গত বছরের ২০ আগস্ট সাতমাইল হাটটি বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন। এর মাস খানেক পর যথারিতী সপ্তাহে দুই দিন শনি ও মঙ্গলবার নিয়মে ২০ সেপ্টেম্বর হতে পুনরায় চালু হয় সাতমাইল পশু হাটের কার্যক্রম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *