রাশিয়ার জেলের নারকীয় ভিডিও ঘিরে চাপে ক্রেমলিন
সম্প্রতি রাশিয়ার জেলগুলোতে কীভাবে বন্দিদের উপরে অত্যাচার ও যৌন নির্যাতন চালানো হয়, তার ভিডিও ফাঁস হয়েছে। ধর্ষণ ও অত্যাচারের ভিডিওগুলো রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে।
রাশিয়ার সংবাদপত্র নোভায়া গ্যাজেটার কাছে জেলের সেই ভিডিওগুলো পাঠানোর পর রুশ মানবাধিকার সংগঠন গুলাগু.নেট-এর কাছে বেলারুশের নাগরিক সের্গেই সাভেলিয়েভ নামের প্রাক্তন এক বন্দি ভিডিওটি ফাঁস করেন। তারপর থেকেই তুমুল শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিশ্বজুড়ে। মস্কোর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে মানবাধিকার সংগঠনটি। ফলে রীতিমতো চাপ বাড়ছে ক্রেমলনের উপর। এমনিতেই বিরোধীদের উপর রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূরণে অত্যাচার থেকে শুরু করে চেচেন বন্দিদের মানবাধিকার নিয়ে কাঠগড়ায় রয়েছে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রশাসন।
জানা গিয়েছে, রাশিয়ার জেলগুলোতে যৌন অত্যাচার মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। জেলের রক্ষী থেকে শুরু করে বন্দিদের একাংশ এহেন কাণ্ডে জড়িত। কোনও প্রতিবাদ করলে অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সেই ঘটনাগুলো প্রকাশ্যে এনেছেন প্রাক্তন বন্দি সের্গেই সাভেলিয়েভ। মাদক পাচারের অভিযোগে প্রায় আট বছরের জেল হয়েছিল সের্গেইর। তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়ে তার কাজের অভিজ্ঞতা ছিল। তাই কারা কর্তৃপক্ষ তাকে জেলের তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়টি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেই সূত্রে জেলের কম্পিউটারে থাকা বহু ভিডিও সের্গেইয়ের হাতে আসে। তার মধ্যে সারাটোভ জেলের কয়েকটি ধর্ষণ ও নৃশংস অত্যাচারের ভিডিও তিনি হস্তগত করেছিলেন।এদিকে, প্রথমদিকে চুপ থাকলেও জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় ওই ভিডিওগুলি সঙ্গে নিয়ে যান সের্গেই। তার পরে সেগুলি তিনি দিয়ে দেন মানবাধিকার সংগঠন গুলাগু.নেট-কে। গুলাগু.নেট জানিয়েছে যে ভিডিওগুলি কেবল মারধর, ধর্ষণ এবং কয়েদিদের অপমানকে নথিভুক্ত করেনি, তবে কারাগারের ব্যবস্থায় নির্যাতনের স্থানীয় প্রকৃতিও প্রমাণ করেছে। এর পরে নড়েচড়ে বসে রুশ প্রশাসন। সের্গেইকে ডেকে পাঠায় রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক। কিন্তু তিনি হাজির হননি। পরে তার নাম ‘ওয়ান্টেড’ তালিকায় তুলে দেওয়া হয়েছে। এবার সের্গেইর দাবি, তাঁকে নিশানা করছে প্রশাসন। তাই বাঁচতে ফ্রান্সে আশ্রয়ের আরজি জানিয়েছেন তিনি।