মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে প্রবাসী দর্শকরা
শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামটা আবুধাবি শহর থেকে বাইরে। ট্যাক্সিতে করে স্টেডিয়ামের কাছাকাছি আসতেই অর্ধচন্দ্রাকৃতির প্যাভিলিয়নটা চোখে পড়ে। মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) দূর থেকে স্টেডিয়ামটাকে যেন শশ্মানবাড়ি মনে হলো। শুনশান নীরবতা চারদিকে। প্রবেশ মুখগুলোতে অপেক্ষমান দর্শকের সারি নেই। কোনো হই-হুল্লোড়ও নেই।
মরুর বুকে শান্ত, নিষ্প্রাণ এক স্টেডিয়াম। আইসিসির সাউন্ড সিস্টেমের কিছুটা আওয়াজ পাওয়া গেলো গেইটে আসার পর। স্টেডিয়ামে প্রবেশের পরও দেখা গেলো একই চিত্র। গ্যালারিগুলো ফাঁকা। হাতে গোনার মতো কিছু দর্শক আছেন বটে। তবে তারাও নিথর হয়ে বসে আছেন নিজ নিজ আসনে।
বিশ্বকাপের ম্যাচে এমন আশ্চর্য স্থবিরতা অবাক করার মতো। বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটা যেন সূচির আনুষ্ঠানিকতাই সম্পন্ন করছিল। বাংলাদেশের ভঙ্গুর ব্যাটিং বলছিল, দর্শকরা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে লাখো বাংলাদেশির বসবাস। অথচ মাঠে তাদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে। এটুকু নিশ্চিত অধোগতির পারফরম্যান্সের কারণে টাইগারদের ম্যাচ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন দর্শকরা।
সুপার টুয়েলভ পর্বে উঠলেও বাংলাদেশ দলের সেমিতে খেলার সম্ভাবনা শেষ। তাই স্বাভাবিকভাবেই মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকদের ম্যাচ দেখার আগ্রহ হারিয়েছেন প্রবাসী দর্শকরা। গাঁটের পয়সা খরচ করে এমন বিবর্ণ ক্রিকেট দেখতে চাইবে কে?
এখানে থাকা বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রচুর অর্থ ব্যয় করে মাঠে আসতে হয়। যাদেরকে পুরোপুরি হতাশ করেছে বিশ্বকাপে টাইগারদের পারফরম্যান্স। বিদেশের মাটিতে বসে দেশের এমন হতশ্রী ক্রিকেট দেখতে ভালো না লাগারই কথা।
অথচ কদিন আগেই এই আবুধাবিতে (গত ২৭ অক্টোবর) ছিল ভিন্ন চিত্র। প্রবাসী দর্শকদের ঢল নেমেছিল মাঠে। গ্যালারিতে ছিল প্রাণের জোয়ার। বাইরে সারি সারি গাড়ি। নিরাপত্তা কর্মীদের ব্যস্ততাও ছিল চোখে পড়ার মতো। যদিও সেদিন ইংল্যান্ডের কাছে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ দল। প্রিয় দলের নতজানু পারফরম্যান্স দেখেই ফিরেছিলেন সবাই। তারপর শারজাহতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছেও হেরেছিল টাইগাররা। তাতেই মূলত বিশ্বকাপ স্বপ্ন তিমিরে হারিয়েছে।