যশোরে ২১টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ,চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা
এস আর নিরব, যশোরঃ
সারাদেশের ন্যায় যশোরেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাস চলাচল বন্ধ করে কর্মবিরতি করছে পরিবহন শ্রমিকরা। এর ফলে যশোর থেকে ২১ টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
আজ শুক্রবার (৫ নভেম্বর) সকালে শহরের মণিহার বাস টার্মিনালে বিক্ষোভ মিছিল করে শ্রমিকরা। এ সময় তারা গাড়ি চললে বাধা দেয়।
এদিকে, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় চরম বিপারে পড়েছেন যাত্রীরা। গন্তব্যে যাওয়ার জন্য তারা বাস টার্মিনালে এসে আটকে পড়েছেন।
রাজকুমার বালা নামে একজন আনসার সদস্য বলেন, খুব ভোরে কুষ্টিয়া থেকে বের হই। পথে বাসনো পেয়ে ভেঙে ভেঙে বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে যশোরে এসেছি। বাড়ি খুলনার ডুমুরিয়ায়। এখন কীভাবে যাবো; তাই নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছি।
শোয়েবুল ইসলাম নামে এক যুবক বলেন, আজ খুলনায় আমার চাকরির জন্যে পরীক্ষা। সকালে এসে জানতে পারলাম গাড়ি বন্ধ। আমার খুব ক্ষতি হয়ে গেলো।
তানজিলা খাতুন নামে এক গৃহবধূ তার ৬ ও ২ বছর বয়সী দুটি সন্তান নিয়ে যশোর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাদের আজই ফিরতে হবে ভাণ্ডারিয়ায়। কিন্তু দূরযাত্রায় বাচ্চাদের নিয়ে কীভাবে গন্তব্যে যাবেন- তাই নিয়ে চিন্তিত তিনি।
যশোর বিআরটিসির কাউন্টার মাস্টার গফ্ফার মিয়া বলেন, আমাদের ৭টি রুটে গাড়ি রয়েছে। বেলা ১১ নাগাদ টুঙ্গিপাড়া-বগুড়া রুটে একটি গাড়ি এসেছে। এখনও সাতক্ষীরা-চাপাইনবাবগঞ্জ, শ্যামনগর-কুড়িগ্রাম, বরিশাল- বেনাপোল, শ্যামনগর- কিশোরগঞ্জ, পাথরঘাটা-পাবনা গাড়িগুলো আসবে।
যশোর বাস মালিক সমিতির সভাপতি অপু কাপুড়িয়া বলেন, করোনার সময় চার মাস গাড়ি বন্ধ ছিল। আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। কেননা গাড়ির যন্ত্রাংশ, গাড়ির ট্যাক্স টোকেনের দাম বেড়েছে। সেসব কারণে শ্রমিকরা গাড়ি চালাতে চায় না-আমরা ও জোর করছি না।
যশোর জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম কমেছিল- সেই সময় সরকার কিন্তু তেলের দাম কমায়নি। বরং তেলের দাম একই রকম রাখে। এখন সামান্য একটু বৃদ্ধিতে তেলের দাম লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়ানো নিশ্চয় সুখের নয়। সরকার এই সময় তেলের দামে ভর্তুকি দিকে পারতো। আমরা যাত্রীদের সাথে বাসভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্ব ফ্যাসাদে যেতে চাইনে। সবকিছুরই দাম বেড়েছে, যাত্রীরাই বা এখন কীভাবে অতিরিক্ত ভাড়া গুণবে।
তিনি বলেন, স্বপ্রণোদিত হয়েই শ্রমিকরা বাস চালাচ্ছেন না।
এ অবস্থায় তেলের দাম কমানোসহ করোনাকালীন লোকসান কাটাতে প্রণোদনা প্রদান ও ট্যাক্স কমানোর দাবি জানিয়েছেন মালিক-শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।