চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিনগামী নৌরুটে চলাচল শুরু করলো ‘এমভি বে ওয়ান’

Share Now..


চলতি পর্যটন মৌসুমের চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচল শুরু করলো বিলাসবহুল এমভি বে ওয়ান। শনিবার (১০ নভেম্বর) রাত ৮টায় চট্টগ্রাম ওয়াটার বাস টার্মিনালে ২দিনের যাত্রা বিরতির মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় বিলাসবহুল জাহাজ ‘এমভি বে ওয়ানের চলতি পর্যটন মৌসুমের চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিন রুটের চলাচল। বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) রাত ১০টায় এই টার্মিনাল থেকে ৭ শতাধিক যাত্রী নিয়ে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে দেশের প্রথম পাঁচতারকা মানের এই ক্রুজশিপটি। কর্ণফুলী ক্রুজলাইনের ৭তলা এই প্রমোদতরীটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় ছেড়ে শুক্রবার ভোরে সেন্টমার্টিন পৌঁছায় এবং এক দিন এক রাত অবস্থান করে শনিবার সকাল ১০টায় সেন্টমার্টিন থেকে রওনা দিয়ে রাতে চট্টগ্রাম ফিরে। চট্টগ্রাম না ফিরে যারা কক্সবাজার যাবেন, তারা যেকোনো দিন এই কোম্পানির ‘এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ও নতুন ‘এমভি বার আউলিয়ায় করে যেতে পারবেন সেখানে। ৪০০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ৭তলা বিলাসবহুল এই প্রমোদতরিটি সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশন সুবিধা সম্বলিত। ১০০০ আসনের জাহাজটিতে সাধারণ চেয়ার থেকে বিলাসবহুল কেবিন, সিভিউ ও রুফটপ বাফেট রেস্তোঁরাসহ একাধিক ট্রেডিশনাল রেস্তোঁরা, আইসক্রিম ও কফিবার, ব্রান্ড শপ সবই আছে। জাহাজ পরিচালনা ও পর্যটকদের সেবা দেয়ার জন্য এতে ১০০ এর বেশি নাবিক রয়েছেন।

বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিতে হয় বলে আন্তর্জাতিক মানের নৌনিরাপত্তা সম্বলিত এই জাহাজে প্রত্যেক যাত্রীর জন্য রয়েছে লাইফ জ্যাকেট ও জীবনতরীসহ যাবতীয় নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি। বিশেষকরে সাগরে ঢেউ হলে জাহাজের তলদেশে থাকা দুইপাশে দুটি পাখা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে। ফলে ঢেউয়ের মুখেও জাহাজ দুলতে থাকেনা। যাত্রীসেবার বিবেচনায় জাহাজটিকে নতুন আঙ্গিকে সাজানোসহ যাতায়াত ভাড়াও বিগত মৌসুমগুলোর তুলনায় কিছুটা কমানো হয়েছে।

মিরপুরের বাসিন্দা আমিনুল ইসলামের মতে রাতটা বিলাসবহুল কেবিনে ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। যতটুক মনে হয়েছে ফাইভ স্টার মানের অত্যাধুনিক স্যুটই এটা। তিনি বলেন ঘুমিয়ে নিয়েছি ভোরের সাগর দেখবো বলে। বউ এর ডাকাডাকিতে ঘুম ভাঙ্গে। তার জোরাজুরিতে আধো ঘুম নিয়েই বারান্দায় যাই। সকালের নীল সমুদ্র এত অনিন্দ সুন্দর আমি আগে কখনো দেখিনি। আগেও বঙ্গোপসাগরে বড় লঞ্চে ঘুরেছি কিন্তু এমন নীল সমুদ্র চোখে পড়েনি।

উত্তরার জামাল আহমেদ এর মতে বে ওয়ানের যাত্রায় সাগরে সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দুটিই দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। এটা অনেক আনন্দদায়ক। ফিরতি পথে গভীর সমুদ্রে জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, পড়ন্ত বিকেলে নির্মল সাগর, গোধূলি বেলা, সব কিছুই মনে রাখার মত।

উল্লেখ্য, সড়ক পথে চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ, সেখান থেকে নৌপথে সেন্টমার্টিন যেতে হত। সব মিলিয়ে ২৮২ কিলোমিটারের যাত্রাপথে ছিল নানা ঝক্কি। সাগর পথে ২৩৬ কিলোমিটার দূরে সেন্টমার্টিন যেতে সেই ঝক্কি এখন আর নেই। বরং বাড়তি পাওনা নদী সাগরের বিচিত্র রূপ আর মুগ্ধতা। নদীর নাব্যতাসহ বিভিন্ন সংকট মোকাবেলা করে দেশের অন্যতম বৃহৎ কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স লি: ২০২০ সালে ‘কর্ণফুলী ক্রুজলাইনের অধীনে শুরু করে অতি কাঙ্ক্ষিত ও স্বপ্নের এই নৌরুট তথা জাহাজ চলাচল। যা ছিল পর্যটক ও দ্বীপবাসীদেরও দীর্ঘদিনের দাবি।

One thought on “চট্টগ্রাম-সেন্টমার্টিনগামী নৌরুটে চলাচল শুরু করলো ‘এমভি বে ওয়ান’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *