দেশের একমাত্র সরকারী শিশু হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত সংকট কাটেনি ঝিনাইদহ শিশু হাসপাতালের নেই পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য ল্যাবরেটরি

Share Now..

\ স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ \
ঝিনাইদহ ২৫ শয্যার সরকারী শিশু হাসপাতালটি জনবল সংকটের কারণে শিশুদের চিকিৎসা সেবা মারাত্মক ভাবে ব্যহত হচ্ছে। ডাক্তার সংকট তেমন একটা না থাকলেও শিশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নেই ল্যাবরেটরি। ফলে ছোট খাটো পরীক্ষাও বাইরে থেকে করে আনতে হচ্ছে অভিভাবকদের। এছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীর ২০টি পদে কোন নিয়োগ না দেওয়ায় শিশু হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজ চরম ভাবে বিঘিœত হচ্ছে। এদিকে এটি বাংলাদেশের একমাত্র সরকারী শিশু হাসপাতাল হওয়ায় সব সময় রোগীর ভীড় লেগেই আছে। প্রতিদিন গড়ে তিন’শ শিশুকে এখান থেকে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া ২৫ শয্যার বিপরীতে ৫০ জন রোগী সব সময় ভর্তি থাকছে। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ৫ কোটি ৬৪ লাখ দুই হাজার ৮৭ টাকা খরচ করে ৩ একর জমির উপর হাসপাতালটি নির্মাণ করে। ২০০৬ সালের দিকে হাসপাতালটির উদ্বোধন করা হলেও কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ধীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় হাসপাতালের মূল ভবন, স্টাফ কোয়ার্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। লুট হয়ে যায় মূল্যবান যন্ত্রপাতিসহ কয়েক কোটি টাকার মালামাল। ২০১৯ সালের দিকে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকা খরচ করে মেরামত ও সংস্কার করা হয়। ২০২১ সালের ৯ জানুয়ারী নির্মানের ১৫ বছর পর শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতেই সংকটে পড়ে দেশের একমাত্র সরকারী শিশু হাসপাতালটি। ডাক্তার ও নার্সসহ বিভিন্ন বিভাগে লোকবল সংকট দেখা দেয়। ধীরে ধীরে ডাক্তার ও নার্স সংকট কিছুটা কাটিয়ে উঠলেও চালুর তিন বছরেও শিশু হাসপাতালে ওয়ার্ডবয়, আয়া, কুক, মশালচি, মালি, ঝাড়–দার ও সুইপার পদে কোন নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এতে প্রশাসনিক কাজে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে। পদে পদে বিঘিœত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা ও দাপ্তরীক কাজে। হরিণাকুন্ডুর গোবরাপাড়া গ্রামের রাবেয়ংা খাতুন জানান, শিশু রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা পেলেও শিশু হাসপাতালে পরীক্ষা নিরিক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। সুইপার না থাকার কারণে হাসপাতালের বাথরুমগুলো ব্যবহার করা যায় না। এদিকে জনবল নিয়োগ না করায় হাসপাতালের সুরম্য স্টাফ কোয়াটারগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। শিশু হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা জুনিয়র কনসালটেন্ট ডাঃ আলী হাসান ফরিদ (জামিল) জানান, সমস্যা সংকটের মধ্যেও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি শিশু রোগীদের উন্নত সেবা প্রদানের। তিনজন চিকিৎসকের স্থায়ী নিয়োগ রয়েছে। তিনজন চিকিৎসক ডেপুটেশনে আছে। ২১ জন নার্সের মধ্যে ১৯ জন আছে। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারীর সব পদই ফাঁকা রয়েছে। তিনি বলেন, জনবল ও প্যাথজলির যন্ত্রপাতি চেয়ে তিন বছরে অন্তত ১০ বার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। জনবল নিয়োগ ও প্যাথজলির যন্ত্রপাতি বরাদ্দ হলে শিশু হাসপাতালটির স্বাস্থ্য সেবা আরো উন্নত হবে বলে তিনি আশা করেন। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, শিশু হাসপাতালটির পুর্নাঙ্গতা ফিরিয়ে আনতে প্রতিনিয়ত মন্ত্রনালয়ের সাথে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আশা করা যায় জনবল ও যন্ত্রপাতির সংকট দুর হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *