পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে উৎসবের আমেজ

Share Now..


স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা দূর-দূরান্ত থেকে সব বয়সের হাজারো মানুষ এই সেতু একনজর দেখার জন্য নদীর দুই প্রান্তে এসে ভিড় করছেন। সেতুর সৌন্দর্যের পাশাপাশি দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কাড়ছে পদ্মার স্বচ্ছ জলরাশিও। ইট-পাথরের নগরজীবন থেকে মুক্ত পরিবেশে পদ্মাপাড়ে বসে স্বপ্নের এই সেতুর সৌন্দর্য অবলোকন করতে লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ফেরিঘাট ও কান্দিপাড়াসহ সেতুর আশপাশ এলাকা হাজার হাজার দর্শনার্থীর মিলনমেলায় রূপ নিয়েছে। সেতুর দুই প্রান্েত এখন উত্সবের আমেজ। এ যেন দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র। ভ্রমণপিপাসু মানুষের চাহিদা মেটাতে সেতুসংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠছে হোটেল, রেস্তোরাঁ, রিসোর্ট, পার্কসহ নানা স্হাপনা।

আর মাত্র ১০ দিন পরই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন পদ্মা সেতু। ইতোমধ্যে সেতু উদ্বোধনের দিনক্ষণ গণনাসহ উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। তবে পদ্মা সেতুর দুই পাড়ের মানুষ রঙিন স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে। তারা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি উন্নত জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। দেশের মোট দেশজ উত্পাদন-জিডিপি ১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে বাড়বে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। সমগ্র জাতির জন্য এটি এখন মর্যাদার সেতু।

এদিকে, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস, বেগম খালেদা জিয়া, ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ পদ্মা সেতুর বিরোধিতাকারীদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন সামনে রেখে রবিবার সেতুর মাওয়া প্রান্েত সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, তাদের দাওয়াত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতুর কারণে বদলে যাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল। এ অঞ্চলের মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠতে শুরু করেছে শিল্প-কারখানা, স্কুল-কলেজ, পর্যটনকেন্দ্র। কৃষি ও মত্স্যনির্ভর শিল্প-কারখানা গড়ে উঠতে শুরু করেছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের প্রিয় ভ্রমণ ও অবকাশকেন্দ্র হয়ে উঠছে পদ্মার পাড়। মুন্সীগঞ্জের মাওয়া এলাকা পর্যটকদের আকর্ষণীয় স্হানে পরিণত হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হলে মোংলা বন্দরের কর্মচাঞ্চল্য অনেক গুণ বেড়ে যাবে। ফরিদপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা, নড়াইল, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, মোংলা, মাদারীপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর ও মুন্সীগঞ্জে নতুন শিল্পায়ন শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *