যশোরে বাঘারপাড়ায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড
এস আর নিরবঃ
যশোরের বাঘারপাড়ায় স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ গুমের দ্বায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড ও ৫০ হাজার টাকার জরিমানার আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার জেলা ও দায়রা জজ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক এ আদেশ দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামি মনিরুল ইসলাম বাঘারপাড়া উপজেলার ভাতুড়িয়া উপজেলার আব্দুল খালেকের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিপি এম ইদ্রিস আলী। তিনি আরও জানান, আদালতে মনিরুলের ছেলে আবু হুরাইরা নিজেই বাবার বিরুদ্ধে স্বাক্ষী দিয়েছেন।
মামলার বিবরনীতে জানা যায়, ২০০২ সালে বাঘারপাড়া উপজেলার হাবুল্লা গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে তারা বেগমের সাথে বিয়ে হয় মনিরুলের। বিয়ের পর তাদের ঘরে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই মনিরুল তারা বেগমকে মারপিট করতো।
বিয়ের দশবছর পর ২০১২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সবুরার পরিবার জানতে পারে তার মেয়ে তারা বেগমকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। এসময় সবুরার পরিবার মনিরুলের বাড়িতে যায়। এছাড়া বিভিন্ন আত্বীয়দের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে তারা বেগমের সন্ধান পেতে ব্যর্থ হন। পরে তারা বেগমের ৬ বছরের শিশু পুত্র সন্তানের নিকট জানতে চাইলে সে জানায়, তার বাবা মনিরুল মা তারা বেগমের মুখে গামছা দিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে বালিশের উপর দাড়িয়ে থাকে। এরপর মাকে ঘারে করে বাবা বাড়ির পেছনের বাগানে নিয়ে যায়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে মনিরুল স্ত্রীর হত্যার কথা স্বীকার করে। মনিরুল জানায় গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত ১২ টায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে। মনিরুল আরও জানায়, স্ত্রীর লাশ বাড়ির পেছনে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছেন। পরে নিহতের পরিবার পুলিশকে জানায়। এরপর স্থানীয় রায়পুর ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই শিবু প্রসাদ ঘটনাস্থলে এসে মনিুরুলকে আটক করে। পরের দিন ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৯ টায় মনিরুলের দেখানো জায়গায় মাটি খুড়ে তারা বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের মা সবুরা খাতুন বাদী হয়ে বাঘারপাড়া থানায় হত্যা ও লাশগুমের অভিযোগ এনে ওইদিনই মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাঘারপাড়া থানার এসআই শিবু প্রশাদ দত্ত মনিরুলকে অভিযুক্ত করে ২০১৩ সালের ৩১ এপ্রিল আদালতে চার্জশিট জমাদেন। পরে মামলার বিচার শুরু হয়। স্বাক্ষগ্রহন শেষে মনিরুলের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিচারক আসামীর মৃত্যুদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।