ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের গাছ বিক্রির টেন্ডার ঠিকাদারের কাছ থেকে দরপত্র ও পে-অর্ডার ছিনতাইয়ের অভিযোগ

Share Now..


স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের গাছ বিক্রির টেন্ডার সিডিউল ও পে-অর্ডার ছিনতাই হয়েছে। যশোর ও কালীগঞ্জের সরকারী দলের কতিপয় নেতা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে পে-অর্ডার ছিনতাইয়ের বিষয়ে কালীগঞ্জ থানা মামলা গ্রহন না করে দুইটি সাধারণ ডায়েরি গ্রহন করেছে। থানার এসআই ভবতোষ কুমার বিষয়টি তদন্ত করছেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের দুই পাশের গাছ বিক্রির জন্য ১৫ গ্রুপের দরপত্র আহবান করে ঝিনাইদহ জেলা পরিষদ। কয়েকজন ঠিকাদার সোমবার দুপুর ১২টার দিকে কালীগঞ্জ শহরের বেজপাড়া নামক স্থানে পৌছলে কতিপয় দুর্বৃত্ত টেন্ডার সিডিউল ও সাথে থাকা এক কোটি ৬৮ লাখ টাকা ২৮ হাজার টাকার ১৯টি পে-অর্ডার ছিনিয়ে নেয়। তবে নিরাপত্তার ভয়ে ঠিকাদাররা কেউ মুখ খুলছেন না। তাদের কাছ থেকে টেন্ডার সিডিউল ও পে-অর্ডার ছিনতাই হলেও মামলার পরিবর্তে হারানোর জিডি করেছেন। টেন্ডারে অংশ নেওয়া কালীগঞ্জের ব্যবসায়ী এম এ কাদের জানান, “আমি ৩ ও ১৩ নং গ্রুপের সাথে ৪টি পে-অডার যুক্ত করেছিলাম। সিডিউল ও পে-অর্ডার আমি ঠিকাদার আক্কাচ আলীর কাছে দিয়েছিলাম জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি জানিয়েছিলেন আমার সিডিউল ও পে-অর্ডার নাকি হারিয়ে গেছে। এ জন্য আমি থানায় জিডি করেছি (জিডি নং ৯৬৪)। পরে শুনলাম আমার ৬২ লাখ ৪৩ হাজার ৩৬৩ টাকার পে-অডার সংযুক্ত করে যশোরের জনৈক রাকিব হাসান শাওন নামে এক ব্যক্তি ঝিনাইদহ জেলা পরিষদে টেন্ডার ড্রপ করেছে। এ করণে আমি বিষয়টি ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের প্রশাসককে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) লিখিত ভাবে অবগত করেছি। ব্যবসায়ী এম এ কাদের অভিযোগ করেন, আমি তো রাকিবকে চিনি না। তিনি কেন আমার পে-অর্ডার নিয়ে টেন্ডার ড্রপ করবেন ? একজনের পে-অর্ডার দিয়ে আরেকজন টেন্ডার ড্রপ করা অন্যায় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে এম এ কাদের দাবী করেন”। কালীগঞ্জের খয়েরতলা গ্রামের ঠিকাদার আক্কাচ আলী তার জিডিতে উল্লেখ করেন, তার কাছে সাইপ্রো টেক, কাকলী এন্টারপ্রাইজ ও স্কইপ্রো টেক এর সিডিউলের সঙ্গে মোট ১৫টি পে-অর্ডার যুক্ত ছিল। কিন্তু সেই পে-অর্ডারগুলো জনৈক রাকিব হাসান শাওনের সিডিউলের সঙ্গে জমা পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি গতকাল মঙ্গলবার কালীগঞ্জ থানায় দুইটি (৯৯১ ও ৯৬৬) জিডি করেছেন। পে-অর্ডার ফেরৎ চেয়ে তিনি জেলা পরিষদের প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের প্রশাসক কনক কান্তি দাস, বলেন জেলা পরিষদের বাইরের কোন ঘটনা আমল যোগ্য নয়, তবে এমন একটি অভিযোগ আমার দপ্তরে জমা পড়েছে। শুনেছি ঠিকাদাররা নাকি নেগোসিয়েশন করার জন্য বসেছিল। তাদের মধ্যে কোন ঘটনার কারণে এমন অভিযোগ উঠতে পারে বলেও তিনি মনে করেন। উল্লেখ ঝিনাইদহ যশোর সড়ক ছয় লেনে উন্নীত হওয়ার কারণে ঝিনাইদহ থেকে বারোবাজার পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের সব গাছ টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করছে জেলা পরিষদ। প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি মুল্যবান এই গাছগুলোর সরকারী মুল্য প্রায় চার কোটি টাকা ধরা হলেও অংশ গ্রহন মুলক উন্মুক্ত টেন্ডারে মুল্য বৃদ্ধি পেতো। কিন্তু টেন্ডার ছিনতাই হওয়ার কারণে মাত্র তিনটি দরপত্র জমা পড়েছে বলে ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *