চা-শ্রমিকদের দেওয়া উপহারের চুড়ি হাতে প্রধানমন্ত্রীর উচ্ছ্বাস
‘এত বড় সম্মান, এত বড় উপহার আমি আর কখনো পাইনি’
চা বাগানের শ্রমিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আপনারা গণভবনে আমার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় আমার জন্য স্বর্ণের চুড়ি উপহার নিয়ে এসেছিলেন। সেই উপহারের চুড়ি এখনও আমি হাতে পরে বসে আছি। আমি আপনাদের ভুলিনি।’শনিবার (৩ আগস্ট) বিকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে দেশের বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় দুই হাতে পরা চুড়ি দেখিয়ে তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে এটা হচ্ছে সবচেয়ে অমূল্য সম্পদ। চা শ্রমিক ভাই-বোনেরা চার আনা, আট আনা করে জমিয়ে আমাকে এই উপহার দিয়েছেন।
এত বড় সম্মান, এত বড় উপহার আমি আর কখনো পাইনি।’সম্প্রতি চা-বাগানের শ্রমিকরা তাদের দৈনিক মজুরিবৃদ্ধির জন্য আন্দোলনে নামেন। ১২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা করার দাবিতে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চলে এ আন্দোলন। পরে গত শনিবার চা-বাগানের মালিকদের সঙ্গে সভা করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তিনি শ্রমিকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। ওই বৈঠকে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আন্দোলনরত শ্রমিকরা এর পরদিন থেকে কাজে যোগ দেন। মূলত চলমান এই প্রেক্ষাপটেই শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী।সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের চা-শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, চা-শ্রমিকরা সবসময় নৌকা মার্কায় ভোট দেন। কিছুদিন আগে চা-শ্রমিকদের আন্দোলন হয়েছে। আমি সেই সময় মালিকদের সঙ্গে বসে আপনাদের দৈনিক মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা নির্ধারণ করে দিয়েছি। আমার মনে হয় সেখানে আপনাদের চাহিদা অনুযায়ী করতে পেরেছি। এ সময় চা-শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসক চান।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, চা-শ্রমিকসহ নিম্নআয়ের সব মানুষের জন্য সরকার কাজ করছে। তাদের কথা মাথায় রেখে ওএমএস ও টিসিবি কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। দেশের একটি মানুষও যেন কষ্টে না থাকে, ঠিকানাহীন না থাকে, গৃহহীন না থাকে, সে লক্ষ্যেই কাজ করছে সরকার। দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা মেনে নেওয়ায় চা-শ্রমিকদের ধন্যবাদ জানান তিনি। চা-শ্রমিকদের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু চা-শিল্পকে জাতীয়করণ করেননি। বরং নানাভাবে প্রণোদনা দিয়েছেন, যাতে এই শিল্পটা ভালোভাবে গড়ে উঠতে পারে। জাতির পিতা চা-শ্রমিকদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দিয়ে গেছেন। তাদের ভোটাধিকারও দিয়েছেন। চা-শিল্পের উন্নতির জন্য বিশেষ ভর্তুকির ব্যবস্থা করে গেছেন।