ইসরায়েলের হামলায় নিহত সেই কিশোরের ইউটিউবে এখন ১৫ লাখ সাবস্ক্রাইবার

Share Now..

গাজা উপত্যকার ১৩ বছরের কিশোর অনি এলডাসের স্বপ্ন ছিল তার ইউটিউব চ্যানেলে একদিন ১০ লাখ সাবস্ক্রাইবার হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ার আগেই ইসরায়েলি বিমান হামলা কেড়ে নেয় তার প্রাণ।

গত বছরের আগস্টে এলডাস তার চ্যানেলে ১ হাজার সাবস্ক্রাইব হওয়ার আনন্দে তার ভক্তদের ধন্যবাদ জানিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করেছিল। ভিডিওটি এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৪ লাখ বার দেখা হয়েছে।

ভিডিওতে এলডাস বলেছিল, ‘আমি অনি এলডাস, গাজার একজন ফিলিস্তিনি। আমার বয়স ১২ বছর। এই চ্যানেলের লক্ষ্য ১ লাখ সাবস্ক্রাইবারে পৌঁছানো। পরে ৫ লাখ  এবং তারপর ১০ লাখ। একসময় আল্লাহর ইচ্ছায় আপনাদের সমর্থন ও ভালবাসায় ১ কোটি সাবস্ক্রাইবারে পৌঁছানো আমার স্বপ্ন।’

তার মৃত্যুর পর বিশ্বাবাসী তার প্রতি ভালোবাসা দেখাতে চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করা শুরু করে। বর্তমান তার স্মৃতি জড়িত চ্যানেলটিতে সাবস্ক্রাইবার রয়েছে ১৫ লাখ। কম্পিউটার ও গেমিংয়ের প্রতি ভালোবাসা ছিল এলডাসের।

ভিডিওর কমেন্টে অসংখ্য ব্যবহারকারী তার প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন এবং বেঁচে থাকার সময় তার স্বপ্ন পূরণে সহায়তা না করায় ক্ষমা চেয়েছেন।

বিবিসি জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর অনির বাড়ি ইসরায়েলি হামলার শিকার হয়। তারা খালা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন,  সে একজন সুখী, আত্মবিশ্বাসী ও পরোপকারী ছেলের জন্য তার দরজা সবসময় খোলা রাখবে। কম্পিউটারের প্রতি ভালোবাসার কারণে পরিবারের সদস্যরা তাকে ‘ইঞ্জিনিয়ার অনি’ বলে ডাকতেন।

১৩ বছরের অনি এখন গাজার মৃত শিশুদের প্রতীক হয়ে উঠেছে। তারা চাচা মোহাম্মদ বলেন, ‘দুটি বোমা হঠাৎ ভবনের ওপরে এসে পড়ে এবং ধ্বংস হয়ে যায়। উপরের তলায় থাকায় আমার স্ত্রী ও আমি সৌভাগ্যবশত বেঁচে যাই। কোনো সতর্কতা ছাড়াই আকস্মিক বোমা এসে পড়ে।

কিন্তু অনির মৃত্যুর সংবাদ শুনে বিশ্বাস করতে পারেননি অনির খালা। তিনি যখন ওয়াই-ফাই কানেক্ট করে সোশ্যাল মিডিয়ায় গেলেন তখন দেখতে পেলেন পরিবারের একজন ক্যাপশনসহ একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘রেস্ট ইন পিস’। এটি দেখার পর সঙ্গে সঙ্গে তিনি হাসপাতালে ছুটে গেলেন।

তিনি বলেন, আমাকে মৃতদেহগুলো দেখতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমার স্বামী দেখতে মানা করেন। তিনি বলেন, আমি যেন বেঁচে থাকার সময়কার তাদের সুন্দর মুখগুলোর স্মৃতি মনে রাখি।’

সে রাতে তার পরিবারের ১৫ জন নিহত হয়। এর মধ্যে অনিও ছিল।

আলার বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, শান্ত, পরোপকারী অনির বাবা একজন কম্পিউটার প্রকৌশলী ছিলেন। আনি সবসময় তার বাবাকে নকল করতো, তারা ল্যাপটপগুলো আলাদা করে টেনে আনত ও সেগুলো একত্রিত করার চেষ্টা করতো।

অক্টোবরের শুরুতে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ২০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত চার হাজারের বেশি শিশু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *