শৈলকুপায় ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
\ বিশেষ প্রতিনিধি, শৈলকুপা \
চলছে গ্রামে গ্রামে মাইকিং। গ্রামের ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করার জন্য এ মাইকিং। আর এ উদ্যোগ নিয়েছেন ঝিনাইদহের শৈলকুপার ৭নং হাকিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান ইকু শিকদার। তার এই ব্যতিক্রমী জনসচেতনামূলক প্রচারণায় খুশি এলাকাবাসি। দেখা যায়, প্রতিদিনই ভ্যানে মাইক ঝুলিয়ে ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে গ্রামে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলছে প্রচারণা। গ্রামের ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের লক্ষ্য করে বলা হচ্ছে জরুরী ঘোষণা, এতদ্বারা ৭নং হাকিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সকল জনসাধারণের অবগতির জন্য জানান যাচ্ছে যে, অত্র ইউনিয়নে প্রত্যেকটি গ্রামের স্কুল পড়ুয়া যে সকল ছাত্র ছাত্রী রয়েছে তাহারা এখন থেকে সন্ধার পরে বাড়িতে বসে লেখা পড়া করবে। প্রয়োজন ব্যাতীত কোনো স্কুল পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী সন্ধার পরে রাস্তা ঘাটে, হাটে-বাজারে, অলিতে, গলিতে অবস্থিত চায়ের দোকানে বসে মোবাইলে গেম খেলা, একসাথে বসে আড্ডা দেওয়া, ফেইসবুক চালানো, ইমো, মেসেঞ্জারে চ্যাটিং করা, অনলাইনে জুয়া খেলা ইত্যাদি কাজে জড়িত থাকতে পারবে না। এমন কাজে জড়িত থাকলে প্রত্যেক গ্রামে নিয়োজিত গ্রাম পুলিশগণ তাহাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া সহ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করবে, এমনকি তাহাদের অভিভাবকদের বিরুদ্ধেও প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনকি স্কুল পড়ুয়া সকল ছাত্র-ছাত্রীকে সন্ধ্যার পরে প্রয়োজন ব্যতীত বাড়ির বাহিরে চলাফেরা না করে, বাড়িতে বসে পড়াশোনা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া যাইতেছে। নির্দেশক্রমে চেয়ারম্যান ইকু শিকদার। এভাবেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে। এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়ায় এলাকায় প্রসংশার জোয়ারে ভাসছে ইউপি চেয়ারম্যান। ইউনিয়নের মাদলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন বলেন, এই মাইকিং-এর পর থেকে আমরা আর কেউ সন্ধ্যার পর বাইরে থাকি না এমনকি মোবাইলও দেখি না। আমরা সন্ধ্যার পরপরই পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগে আমরা খুশি। মাদলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, এখন ইউনিয়নের স্কুল পড়–য়া শিক্ষার্থীদের সন্ধ্যার পর আর মোবাইল নিয়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে না। চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগ নেওয়াতে আমরা খুশি সেইসাথে ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হবে। ৭নং হাকিমপুর ইউনিয়নের হরিহরা গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানিয়েছি। আগের মত আর ছাত্রছাত্রীরা সন্ধ্যার পর মোবাইল নিয়ে আড্ডা দিচ্ছে না। চেয়ারম্যানের এমন উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়–ক দেশের প্রতিটি গ্রামে। হাকিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান ইকু শিকদার বলেন, মোবাইলের কারণে স্কুল পড়–য়া ছাত্রছাত্রীসহ যুব সমাজ আজ ধ্বংসের দারপ্রান্তে। আমার এই জনসচেতনামূলক প্রচারণার মাধ্যমে একজনও যদি সচেতন হয় তাহলে আমার এই প্রচেষ্টাকে স্বার্থক মনে করবো।